সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় দেশের দগ্ধ ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের উন্নয়নের লক্ষ্যে এ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে আসছে। দগ্ধ ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন কর্মকান্ডে সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় নিয়ন্ত্রণাধীন সমাজসেবা অধিদফতরের মাধ্যমে এ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে। এ কার্যক্রমের মাধ্যমে দেশব্যপী সকল উপজেলা ও শহর এলাকায় লক্ষ্যভুক্ত দগ্ধ ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের আর্থ-সামজিক উন্নয়ন ও তাদের পরিবার ভিত্তিক দারিদ্র্য বিমোচনে বিশেষ ভুমিকা রাখছে। ‘এসিডদগ্ধ মহিলা ও শারীরিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের পুনর্বাসন কার্যক্রম’ নামে ২০০২-০৩ অর্থ বছর থেকে এ কর্মসূচি শুরু করা হয় এবং এপ্রিল ২০১০ থেকে এ কর্মসূচির নাম পরিবর্তন করে ‘এসিডদগ্ধ ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের পুনর্বাসন কার্যক্রম’ করা হয়। পরবর্তীতে সকল ধরণের দগ্ধ ব্যক্তিকে কর্মসূচির অন্তর্ভুক্ত করার লক্ষ্যে নীতিমালা সংশোধন পূর্বক মার্চ’২০১৬ থেকে কর্মসূচির নাম পরিবর্তন করে “ দগ্ধ ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের পুনর্বাসন কার্যক্রম ” করা হয়। এ কার্যক্রম দেশের দরিদ্র দগ্ধ ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এ কর্মসূচির মাধ্যমে দগ্ধ ব্যক্তিদের দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা নিশ্চিত করাসহ দগ্ধ ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে তাদের দক্ষতাভিত্তিক অথবা ব্যক্তি যে কাজে অভিজ্ঞ ও পারদর্শী সে কাজের জন্য তাকে অথবা তার পরিবারকে ক্ষুদ্রঋণ সহায়তা প্রদান করাই এ কর্মসূচির উদ্দেশ্য।
সেবা:
১। ক্ষুদ্রঋণ : দগ্ধ ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তি যাদের মাথাপিছু বার্ষিক গড় আয় ১,০০,০০০.০০ টাকার ঊর্ধ্বে নয়, তাদেরকে ৫,০০০ টাকা থেকে ৩০,০০০.০০ টাকা পর্যন্ত সুদমুক্ত ক্ষুদ্রঋণ দেওয়া হয়ে থাকে। ঋণ গ্রহণের পর ৫% সার্ভিসচার্জসহ সমান ২০ কিস্তিতে পরিশোধ করতে হয়।
২। চিকিৎসা সহায়তা : দগ্ধ দরিদ্র ব্যক্তিকে এককালীন চিকিৎসা সহায়তা বাবদ সর্বোচ্চ ২০,০০০.০০ টাকা পর্যন্ত অনুদান প্রদানের ব্যবস্থা রয়েছে।
সেবা গ্রহীতা:
নিম্ন আয়ের দগ্ধ ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তি যাদের মাথাপিছু বার্ষিক গড় আয় ১,০০,০০০.০০ টাকার ঊর্ধ্বে নয়।
সেবাদান কেন্দ্র:
৪৮৯টি উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়;
৮০টি শহর সমাজসেবা কার্যালয়।
কার্যাবলি:
দগ্ধ ও প্রতিবন্ধী জরিপ;
প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের তালিকাভূক্তি
বৃত্তিমূলক/সামাজিক ও স্বাস্থ্য বিষয়ক ওরিয়েন্টেশন
স্কীমসহ নির্ধারিত ফর্মে আবেদন
স্কীম এর সম্ভব্যতা যাচাই
উপযুক্ত ঋণ গ্রহীতা নির্বাচন;
সুদমুক্ত ক্ষুদ্রঋণ প্রদান;
নাগরিকদের সহযোগিতার ক্ষেত্র:
সুবিধাভোগী কর্তৃক ঋণ প্রাপ্তির পর তৃতীয় মাস হতে সমান ২০ কিস্তিতে অথবা স্কীম ভেদে ১, ২ বা ৩ কিস্তিতে ঋণের অর্থ শতকরা ৫ ভাগ সার্ভিসচার্জসহ ফেরত দেয়া;
দলীয় সদস্য কর্তৃক নিয়মিত নির্ধারিত হারে সঞ্চয় করা;
কার্যক্রমের মাধ্যমে সদস্যদের যে সকল বিষয়ে সচেতন করা হয় তা মেনে চলা;
কোন সুবিধাভোগী প্রাপ্ত ঋণের অর্থ নিয়মমত পরিশোধ না করলে তা আদায়ে কর্তৃপক্ষকে সহযোগিতা করা;
সঠিক গ্রাম/মহল্লা ও উপযুক্ত ঋণ গ্রহীতা নির্বাচনে কর্তৃপক্ষকে তথ্য সরবরাহ ও সহযোগিতা;
ঋণ প্রদানে কোন অসচ্ছতা পরিলক্ষিত হলে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের নিকট অবহিত করা।
সেবা প্রদানের সময়সীমা:
কার্যক্রম বাস্তবায়ন কমিটি কর্তৃক উপযুক্ত ঋণ গ্রহীতা নির্বাচনের পর সর্বোচ্চ ১৫ কর্ম দিবস।
সেবা পাওয়ার জন্য যার সাথে যোগাযোগ করতে হবে:
উপজেলা সমাজসেবা অফিসার, সকল উপজেলা;
সমাজসেবা অফিসার, সকল শহর সমাজসেবা কার্যালয়;
বাস্তবায়ন তথ্যাদি :
বিষয় |
পরিসংখ্যান |
প্রাপ্ত তহবিল |
৮৬.৪৯ কোটি টাকা |
ক্ষুদ্রঋণ হিসেবে বিনিয়োগকৃত অর্থের পরিমাণ |
৮২.৫১ কোটি টাকা |
পুনঃবিনিয়োগকৃত অর্থের পরিমাণ |
৯৯.১৩ কোটি টাকা |
মূল অর্থ আদায়ের হার |
৬৯% |
উপকৃত পরিবার সংখ্যা |
১.৬৫ লক্ষ |
আদায়কৃত সার্ভিস চার্জ |
৫.৫৯ কোটি টাকা |
ব্যক্তিগত সঞ্চয়ের পরিমাণ |
১.৪৪ কোটি টাকা |
আশ্রয়ন প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ের ঋণ কর্মসূচি:
সমাজসেবা অধিদফতর ২০০১ থেকে আশ্রয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। পল্লী এলাকার দরিদ্র ভূমিহীন, গৃহহীন, ছিন্নমূল পরিবারকে প্রশিক্ষণ ও ক্ষুদ্রঋন প্রদান করে পুনর্বাসন করাই এ কর্মসূচির উদ্দেশ্য। দেশের ৫৭টি জেলার ১৮১টি উপজেলায় কর্মসূচি বাস্তবায়িত হচ্ছে। এ কর্মসূচিতে তহবিলের পরিমাণ ২০ কোটি ৭৩ লক্ষ ১৮ হাজার টাকা। এ কর্মসূচির আওতায় সুফলভোগীর সংখ্যা ৬১ হাজার ৮৭৪ জন।
Planning and Implementation: Cabinet Division, A2I, BCC, DoICT and BASIS